Photo of Ad1

গ্রহাণু কী?এগুলো কেন বিপদজনক?

গ্রহাণু বা অ্যাস্টেরয়েড হল প্রধানত পাথর দ্বারা গঠিত বস্তু যা তার তারাকে কেন্দ্র করে আবর্তন করে। আমাদের সৌরজগতে গ্রহাণুগুলো ক্ষুদ্র গ্রহ (Minor planet অথবা Planetoid) নামক শ্রেণীর সবচেয়ে পরিচিত বস্তু। এরা ছোট আকারের গ্রহ যেমন বুধের চেয়েও ছোট। বেশিরভাগ গ্রহাণুই মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত গ্রহাণু বেল্টে থেকে নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে আবর্তন করে।

👉 গ্রহাণুতে পদার্পণ ঝুঁকিপূর্ণ। মনুষ্যনির্মিত কোন যান্ত্রিক বাহনেরই সেখানে নিরাপদে নামানো কঠিন কাজ, তাই মানুষের কথা বাদ দিলাম। এর কারণ হলোঃ

⇨ প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো -দূরত্ব। পৃথিবী থেকে এরা ২০৪.৪৩ মিলিয়ন মাইল, যেখানে মঙ্গলের দূরত্ব ৩৫.৮ মিলিয়ন মাইল। এতো দূরে মহাকাশ যান পাঠানো সত্যিই চ্যালেঞ্জের আর সময়সাপেক্ষ।

⇨ অবতরণ করা আরেকটা বড় সমস্যা। গ্রহাণুগুলো আসলে খুব বুড় না,তাই তাদের অভিকর্ষ বলও কম। তার উপর এরা দ্রুত গতিতে ঘুরতে থাকে। মহাকাশযানকে গ্রহাণুর কাছাকাছি গিয়ে আবর্তন করে তারপর সেই কম অভিকর্ষ বলের মাঝে অবতরণ করতে হয়। এর মাঝে অন্যান্য গ্রহাণুকণার আঘাতে মহাকাশযানের ক্ষতি হতেও পারে।

⇨ অধিক দূরে থাকায় তাপমাত্রার ব্যাপারটাও মাথায় রাখতে হয়। সেখানে খুবই ঠান্ডা, -৭৩° থেকে -১০৫° সেলসিয়াস। তার সাথে মহাকাশের রেডিয়েশন তো আছেই।

👉 এতো চ্যালেঞ্জের মাঝেও নাসা গ্রহাণুতে অভিযান শুরু করেছে। কিন্তু কেন এ অভিযান এতটা গুরুত্বপূর্ণ?

☞ পৃথিবীতে প্রাণের উৎস কী ছিল সে প্রশ্নের উত্তর আজও ধোঁয়াশায়। বহু গবেষণা চালিয়েও মেলেনি এর প্রকৃত ব্যাখ্যা। এ নিয়ে শোনা যায় বহু কাল্পনিক গল্প, যার মধ্যে বিজ্ঞানের মাত্রা নামমাত্র। তবে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সম্ভবত এইবার মীমাংসা করতে চলেছে বহু আলোচিত এ রহস্যের। মহাকাশে তাঁরা ওসিরেক্স রেক্স নামে সাত বছরের একটি অভিযান চালাতে চলেছে যা সফল হলে জানা যেতে পারে এই গুরুত্বপূ্র্ণ তথ্য।

এর জন্য বিজ্ঞানীরা বেছে নিয়েছেন বেনু নামের এর গ্রহাণুকে।

➤ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যে মিনারেল ও কেমিক্যালগুলি গ্রহাণুতে অবস্থান করে, তার নমুনা পরীক্ষা করে প্রাণের উৎস জানা যেতে পারে। এই অভিযানের জন্য গ্রহাণু নির্বাচন করার প্রধান কারণ হল, বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিটি গ্রহাণুই একটি টাইম ক্যাপসুল। সৃষ্টির সূচনা থেকেই এদের অবস্থান। আরও নির্দিষ্টভাবে গ্রহাণু বেনু নির্বাচন করার কারণ, এখানে প্রাচীন কার্বনজাতীয় পদার্থের প্রাধান্য অনেক বেশি। আর যে কোনও প্রাণ সৃষ্টিতে কার্বনজাত উপাদানের গুরুত্ব কতখানি, তা কমবেশি সকলেরই জানা।

বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, মহাকাশযানটিকে বেনুতে পাঠানোর পরিকল্পনা এবং তা রূপায়ণের পদ্ধতি শুরু থেকেই বেশ জটিল ছিল। কারণ গ্রহাণুগুলি যে আবর্তে অবস্থান করে, তাঁর বিজ্ঞানটাই এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০১ সালে নাসার ‘নিয়ার’ নামক একটি মহাকাশযান একটি গ্রহাণুতে নেমেছিল। তবে সম্পূর্ণরূপে সফল হয়নি সে পরীক্ষা। যদি ওসিরেক্স রেক্স অভিযান সফল হয়, তবে এটি দ্বিতীয় এমন মহাকাশযান হবে, যেটি নমুনা সহকারে পৃথিবীতে ফেরত আসবে। এর আগে ২০১০ সালে জাপানের হায়াভুসা মহাকাশযান সর্বপ্রথম গ্রহাণুর থেকে নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরেছিল। তবে উদ্‌ঘাটন হয়নি প্রাণের উৎসের রহস্য।

গ্রহাণু বেনু রহস্যময়। আমাদের গ্রহাণু সম্পর্কে জ্ঞান এমনিতেই কম। এদের সম্পর্কে জানার জন্য অভিযানের বিকল্প নেই।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রহস্যজনকভাবে বেনুর পৃষ্ঠ থেকে কণা বের হচ্ছে! এছাড়াও এতে সোনা,প্লাটিনাম এর মতো দামী ধাতুও পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

সম্প্রতি নাসার মহাকাশযান সাফল্যের সাথে বেনুতে অবতরণ করতে পেরেছে।

এটি ২০২৩ সালে পৃথিবীতে ফিরে আসবে।

গ্রহাণু সৃষ্টির শুরুতে বিগ ব্যাং এর মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল। পরবর্তীতে কোন কারণে গ্রহের সাথে মিলিত হতে পারে নি। তাই বৃহস্পতি আর মঙ্গলের মাঝে থাকা ফাঁকা জায়গাতে কিছুসংখ্যক আটকে আছে।

ধন্যবাদ। 🙂

সূত্রঃ উইকিপিডিয়া

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন
Photo of Ad1