আলেয়া এক ধরনের বায়ুমণ্ডলীয় ভৌতিক আলো যা রাতের অন্ধকারে জলাভূমিতে বা খোলা প্রান্তরে দেখা যায়।
মাটি হতে একটু উঁচুতে আগুনের শিখা জ্বলতে থাকে। ইংরেজি ভাষায় একে will-o'-the-wisp (/ˌwɪl ə ðə ˈwɪsp/) বলে।
আলেয়া সৃষ্টি নিয়ে নানা মত রয়েছে। লোককথায় একে ভৌতিক আখ্যা দেওয়া হলেও বিজ্ঞানীরা মনে করে গাছপালা পচনের ফলে যে মার্শ গ্যাসের সৃষ্টি হয় তা থেকে আলেয়া এর উৎপত্তি। যেহেতু মিথেন গ্যাসের আপনি জ্বলার ক্ষমতা নেই তাই আগুন শুরুর কারণ হিসেবে তারা দাহ্য ফসফিন (PH3) ও ফসফরাস ডাইহাইড্রাইট(P2H4) গ্যাসকে চিহ্নিত করেছে। কেউ মনে করেন বাঁশ বা শুকনো কাঠের ঠোক্করে যে স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয় তা থেকেই এই মার্শ গ্যাসে আগুন লাগায়। জীবনানন্দ দাশ তার প্রথম কাব্য সংকলন ঝরা পালকে 'আলেয়া' নামক একটি কবিতা লেখেনঃ
"প্রান্তরের পারে তব তিমিরের খেয়া
নীরবে যেতেছে দুলে নিদালি আলেয়া!"
আলেয়াতে থাকা ফসফরাস ডাইহাইড্রাইট (P2H4) গ্যাসটি বায়ুর সংস্পর্শে এলে জ্বলে ওঠে। ফলে অন্যান্য গ্যাস গুলি (অর্থাৎ মিথেন এবং ফসফিন) একই সাথে নীল শিখা সহ জ্বলতে থাকে। বায়ুপ্রবাহের ফলে জ্বলন্ত গ্যাসটি গতিশীল হয়। এটি হলো আলেয়া।
জলাশয়ে পচে যাওয়া লতা পাতা থেকে মিথেন গ্যাস, অনেক পুরনো কবরস্থান, শ্মশান থেকে মানুষের হাড় থেকে উৎপন্ন ফসফিন গ্যাস বায়ুতে মিশে আগুন জ্বলে, যা মানুষ ভৌতিক ব্যাপার মনে করে।
আলেয়া কোনো ভৌতিক ব্যাপার নয়।
সুত্রঃ আলেয়া - উইকিপিডিয়া