পানি খেয়ে ভিটামিনের অভাব পূরণ করা গেলে কতই না ভালো হতো! কিন্তু দুঃখের বিষয়, এরকম কিছু নর্মাল পানি অর্থাৎ আমরা যে পানি খেয়ে থাকি সেখান থেকে সম্ভব নয়।
নর্মাল গ্রাম খাবার পানিতে আপনি পাবেন ৪ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম।[1] এছাড়া খুবই সামান্য পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, কপার, আর্সেনিক পেতে পারেন। অন্য আর কিছুই পাওয়া যাবে না।
সামুদ্রিক পানির কাছে ভিটামিন খুঁজতে গেলেও হতাশ হবেন। সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, কপারের পাশাপাশি ক্লোরাইড, আয়োডাইড, ফ্লোরাইড, ফসফরাস, পটাশিয়াম ইত্যাদি পাওয়া যাবে। তবে এতো কিছু দেখে খুশিতে লাফ দিবেন না দয়াকরে। লবণের পরিমাণ এতই বেশি যে, পানযোগ্য নয়। এতে থাকা অত্যধিক লবণ শরীরের টা বাজিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট।
বাজার থেকে কেনা পানির বোতলের গায়ে থাকা কাগজটা পড়ে দেখতে পারেন। সেখানেও ভিটামিনের অস্তিত্ব নেই।
তাহলে চলুন এবার বৃষ্টির পানিতে ভিটামিন খুঁজি গিয়ে।
বৃষ্টির পানিতে ভিটামিন পাওয়া যেতে পারে তবে সেটা বৃষ্টির পানির জন্য নয় বরং কিছু ব্যাকটেরিয়ার জন্য।[2] একটু ব্যাখ্যা দিলেই পরিষ্কার বোঝা যাবে।
পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের অণুজীব ঘুরেফিরে বেড়ায়। অণুজীবদের মধ্যে কিছু ব্যাকটেরিয়া বায়ো সিনথেসিসের সময় বাই প্রোডাক্ট হিসেবে ভিটামিন তৈরি করে থাকে। এই ধরনের কয়েকটি ব্যাকটেরিয়ার নাম দিলাম- Pseudomonas denitrificans, Bacillus megaterium, Propionibacterium freudenreichii, Streptomyces olivaceus, Prevotella copri ইত্যাদি।[3][4]
উপরোক্ত ব্যাকটেরিয়া যদি বৃষ্টির পানিতে উপস্থিত থাকে তবে ভিটামিন পাবো, আর না থাকলে পুরোই ভিটামিনহীন। উনাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পরীক্ষা করা ছাড়া উপায় দেখি না, অবশ্য কীভাবে শর্টকাট উপায়ে পরীক্ষা করা যাবে তা জানা নেই।
প্রশ্ন হলো যে পরিমাণ ভিটামিন পাবো বৃষ্টির পানি থেকে তা কি আমাদের শরীরের জন্য যথেষ্ট? খুবই সামান্য পরিমাণ পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে আমার জন্য কাজের কিনা জানতে স্বাস্থ্য বিশারদের পরামর্শ নেয়া উচিৎ। আর বৃষ্টির পানি মাটি দিয়ে গড়িয়ে গেলে ভিটামিন এর পরিমাণটা একটু বেড়ে যেতে পারে, মাটিতে তো আর অণুজীবের অভাব নেই! এই পানি নিশ্চয় আমি খেতে চাইবো না!
তথ্যসূত্রগুলো-